সেইসব শবরাজি / জয়ন্ত দেবব্রত চৌধুরী
আমার দুহাত ভর্তি
অঢেল সময়, এখন আমি দেখি
মাঠ-ঘাট, বনে-বাদাড়ে,
রাস্তা ঘুরে শুধুই এখন দেখি
ইঁদুরের শব নিয়ে
কাকের টানাটানি অশ্লীল লাগে তাই
মৃতদেহটা ছিনিয়ে এনে
ঢেকে দিই মৃত্যুসফেদ কাফনে
কাকেদের খিদে মেটে
না, জানান দেয় কর্কশ কলরবে
ঠোক্কর দিতে উড়ে উড়ে
আসে লোকালয়ে যখনতখন
একদল বেড়িয়ে পড়ে
আনকোরা কুমারী লাশের সন্ধানে
দুষ্টু বালক কিছু
চড়ুই শিকার করে টাঙায় গাছের ডালে
আর হ্যাঁচোড়প্যাঁচোড়
শাখায় উঠে নামিয়ে আনি ওকে
সহসা আঙুল ঠেকে
সদ্যশীতল বুকে, চমৎকৃত আমি
সাততাড়াতাড়ি
ধুলোমাটি চাপা দিই অঞ্জলিপুটে পাখি
দূর হতে ভেসে আসে
চড়ুইভাতির অসংস্কৃত কোলাহল
কি এক শখের বশে
পায়রা কিনি, উড়াই তেতলা ছাদে
সাদা-কালো-মেটে আকাশে দেখে মনে পড়ে বেঁচে আছি
খোপের কাছে নেউল
দেখে পিছু করি, ঝোপে দিই উঁকি
আমার সাধের লোটন পাই
না; শুধুই চামড়া, রক্ত,
ঝুঁটি
ফেননিভ পালক কুড়িয়ে
ফিরে আসি দৈনন্দিন বাসায়
মেঝেয় উবু বসে দেখি, লাল পিঁপড়ের সারিবদ্ধ উল্লাস
কালো পিঁপড়েকে ঘষটে
ঘষটে গর্তে টেনে নিয়ে যাওয়া
পা দিয়ে পিষে দিই
বিজয়ীদের দল, ঢেলে দিই অসময়ে
জমানো কেরোসিন, আগুনের উচ্ছ্বাসে ওই কালোটাকে
আর কিছুতেই খুঁজে
পাইনা সেই অসামাজিক রণক্ষেত্রে
পথে ঝড় ওঠে, উড়ে আসা টুকরো খবর লেপ্টে যায় মুখে
নিয়মমাফিক উদ্ধার
করি অপরাজিতার হার, কাগজ ছিঁড়ি শুধু
একদিন বোন ইশকুলে
যায় সকালবেলায় ধোঁয়ার মধ্যে দিয়ে
ফেরে না আর
সন্ধেবেলায়, নিয়তিবদ্ধ আমি অগত্যা উঠে পড়ি
সকাল সকাল, চতুর্দিকে খুঁজে বেড়াই জোড়া শালিকের ঝাঁক।
কোন মন্তব্য নেই