দু'টি কবিতা / শ্যামাশীষ জানা
অলঙ্করণঃ সঞ্জীব
শেকড়
সহ্যের সীমানা ঠিক কতখানি পেরিয়ে গেলে
অসহ্য মনে হয় ?
চারিপাশে এত কথার বল্লম তীর ধেয়ে আসে
মনে হয় এর চেয়ে ঢের ভালো
চুপচাপ চেয়ে থাকি
নিস্তব্ধ শেকড়গুলোর দিকে
অসহায় আঙ্গুলগুলোর দিকে
জলের উপরে ভাসছে সারিবদ্ধ শেকড়
মাটির গন্ধ আর এ জীবনে পাওয়া হল না ওদের
মাটি, স্থির স্থায়ী সম্বল
যাকে বুকে আঁকড়ে ধরে
নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দেওয়া যায় পুরো এক জীবন
এখন আমাদের মন ম্যানগ্রোভময়
তার শেকড়ে শেকড়ে বয়ে চলে অস্থির লোনা জলস্রোত
কার জল, কোথাকার জল
পরখ করতে পারিনা গভীরতা
আমার সমস্তকে কাঁপিয়ে দিয়ে বয়ে যায় এক খরস্রোত
আর আঙ্গুলগুলোর কথা এখন না হয় থাক
তাদের হারিয়ে যেতে দেখেছি
শ্বেত শুভ্র অন্ধকারময় অনিশ্চিত রাতের গভীরে !
শেয়ালসুখী
এখন আমরা সবাই শেয়ালের মত সুখী
ঝাঁক বেঁধে একইসুরে একই কথা বলার নিপুণ কৌশল
আমরা বেশ জেনে গেছি
অজান্তে ঝোপের শরীর ক্রমশ বেড়ে ওঠে
ঝোপের নীচে গড়া অবিশ্বাসের অযুত গর্তের ভেতর
আমরা লুকিয়ে রেখেছি পৃথিবীর প্রভূত লীনতাপ
শেয়ালকাঁটাতে ভরা এ ঝোপ...
আলোকরশ্মিও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়
কাঁটার গা থেকে ঝরে পড়ে সমস্ত উত্তাপকণা
প্রতি রাতে আকাশের এক একটি নক্ষত্র কে চুরি করে এনে
শেয়ালের দল গর্তে ভরে রাখে,
তারপর পা দিয়ে আঁচড়ে আঁচড়ে মাটি টেনে চাপা দেয়
এক একটি রাত
অজান্তে মুছে যায় এক একটি তারা
অন্তত সত্যি বলার চেষ্টা করেছিল যারা !
কোন মন্তব্য নেই